Brize top to wb
নিচে পশ্চিমবঙ্গের বড়ো এবং গুরুত্বপূর্ণ ৮টি সেতুর বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হলো, যেগুলো রাজ্যের পরিবহন, বাণিজ্য এবং পর্যটনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:
---
১. হাওড়া সেতু (Howrah Bridge)
অন্য নাম: রাবীন্দ্র সেতু
অবস্থান: হুগলি নদীর উপর, হাওড়া ও কলকাতার সংযোগস্থলে
প্রতিষ্ঠা: ১৯৪৩ সালে
বৈশিষ্ট্য: এটি একটি ক্যান্টিলিভার ব্রিজ, কোন পিলার ছাড়াই নদীর উপর নির্মিত।
গুরুত্ব: কলকাতা শহরের প্রাণকেন্দ্র। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ ও যানবাহন এই সেতু ব্যবহার করে।
---
২. করোনেশন সেতু (Coronation Bridge)
অন্য নাম: সেভক সেতু
অবস্থান: তিস্তা নদীর উপর, জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং জেলার সংযোগস্থলে
প্রতিষ্ঠা: ১৯৩৭ সালে, ব্রিটিশ আমলে
বৈশিষ্ট্য: শৈল্পিকভাবে নির্মিত এবং রাজকীয় স্থাপত্যশৈলীতে তৈরি
গুরুত্ব: উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি ও সমতল এলাকার সংযোগ স্থাপন করে।
---
৩. জুবিলি সেতু (Jubilee Bridge)
অবস্থান: হুগলি নদীর উপর, নৈহাটি ও ব্যান্ডেল স্টেশনের মাঝে
প্রতিষ্ঠা: ১৮৮৭ সালে, রানী ভিক্টোরিয়ার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে
বৈশিষ্ট্য: এটি একটি রেল সেতু এবং পুরোপুরি রিভেটেড স্টিল দ্বারা তৈরি
গুরুত্ব: দীর্ঘদিন ধরে রেল পরিবহণে ব্যবহৃত হয়েছে, বর্তমানে একটি প্রতীকী ঐতিহ্য
---
৪. বিদ্যাসাগর সেতু (Vidyasagar Setu)
অন্য নাম: দ্বিতীয় হুগলি সেতু
অবস্থান: হাওড়া ও কলকাতা সংযোগকারী হুগলি নদীর উপর
প্রতিষ্ঠা: ১৯৯২ সালে
বৈশিষ্ট্য: এটি ভারতের বৃহত্তম কেবল-স্টেইড ব্রিজগুলির একটি
গুরুত্ব: হাওড়া ও দক্ষিণ কলকাতার মধ্যে দ্রুত যানবাহন চলাচলের অন্যতম প্রধান রুট।
---
৫. বিবেকানন্দ সেতু (Vivekananda Setu)
অন্য নাম: বালী ব্রিজ
অবস্থান: বালী ও দাক্ষিণেশ্বরের মধ্যে, হুগলি নদীর উপর
প্রতিষ্ঠা: ১৯৩১ সালে
বৈশিষ্ট্য: রেল ও সড়ক উভয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়
গুরুত্ব: উত্তর কলকাতার যাত্রীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংযোগপথ
---
৬. নিবেদিতা সেতু (Nivedita Setu)
অবস্থান: বিবেকানন্দ সেতুর পাশে, হুগলি নদীর উপর
প্রতিষ্ঠা: ২০০৭ সালে
বৈশিষ্ট্য: আধুনিক কেবল-স্টেইড ব্রিজ
গুরুত্ব: বিবেকানন্দ সেতুর উপর চাপ কমাতে নির্মিত এবং কলকাতা শহরের ট্রাফিক পরিচালনায় সহায়ক
---
৭. ঈশ্বর গুপ্ত সেতু (Iswar Gupta Setu)
অবস্থান: হুগলি জেলার কালনা ও শক্তিগড়ের মধ্যে, ভাগীরথী নদীর উপর
প্রতিষ্ঠা: ১৯৮৯ সালে
বৈশিষ্ট্য: কংক্রিট ও স্টিল নির্মিত
গুরুত্ব: হুগলি ও নদীয়া জেলার মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে
---
৮. মাতলা সেতু (Matla Bridge)
অবস্থান: দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং শহরে, মাতলা নদীর উপর
প্রতিষ্ঠা: সাম্প্রতিক দশকে নির্মিত
বৈশিষ্ট্য: সুন্দরবন সংলগ্ন অঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত করে
গুরুত্ব: সুন্দরবনের ভিতরের এলাকায় পর্যটন ও পরিবহণ সহজ করে তোলে
---
এই সেতুগুলি শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থাকেই শক্তিশালী করেনি, বরং প্রতিটিই নিজস্ব ঐতিহাসিক, স্থাপত্যিক এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বহন করে।
Comments
Post a Comment